কিভাবে নিজেকে ব্যক্তিত্ববান মানুষ হিসেবে তৈরী করবেন?

personality

ব্যক্তিত্ব এমন এক প্যারামিটার যা দিয়ে ব্যক্তিত্ববান এবং ব্যক্তিত্বহীন ব্যক্তিদের খুব সহজে চিহ্নিত করে ফেলা যায়।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে এই ব্যক্তিত্বটা আসলে কী? ব্যক্তিত্ব হলো একজন ব্যক্তির আচার-আচরণের সমষ্টি যার মাধ্যমে ঐ ব্যক্তির চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য এবং কাজ-কর্ম প্রতিফলিত হয় — কিভাবে নিজেকে ব্যক্তিত্ববান মানুষ হিসেবে গড়ে তুলবেন আজ সেই বিষয়ে আলোচনা করবো। চলুন তবে জেনে নেওয়া যাক :

১। কথা দিয়ে কথা রাখুন :

কাউকে কোনো বিষয়ে কথা দিলে সেটা রাখার চেষ্টা করুন। আপনি কাউকে কোনো বিষয়ে কথা দিয়েছেন, সেই ব্যক্তি আপনার উপর ভরসা রেখেছে। আপনাকে বিশ্বাস করেছে। তাঁর এই বিশ্বাস এবং ভরসা কোনোভাবেই ভাঙ্গতে দিবেন না। আপনি যদি কথা দিয়ে রাখেন তবে তাঁর কাছে আপনি অসাধারণ কেউ হয়ে যাবেন, আর যদি রাখতে না পারেন তবে তাঁর আশা ভঙ্গ হবে। বিশ্বাস ভাঙ্গবে। তাঁর চোখে আপনি মিথ্যাবাদী হয়ে যাবেন। একান্তই যদি কোনো কারণে কথা রাখতে না পারেন তবে নিজের অবস্থান বিনয়ী হয়ে তাঁর কাছে ক্লিয়ার করুন।

২। ভালো শ্রোতা হন :

শুনবেন বেশি, বলবেন কম। অন্যরা যখন কথা বলবে আপনি মনোযোগ দিয়ে আগে শুনুন। তারপর অল্প কথায় নিজের ব্যাখ্যা উপস্থাপন করুন। মনোযোগী শ্রোতা এবং অল্প কথায় যাঁরা মূল বক্তব্য তুলে ধরতে পারে তাঁদের প্রতি সকলের ইতিবাচক মনোভাব থাকে। ব্যক্তিত্ব বাড়াতে হলে ভালো শ্রোতা হওয়ার বিকল্প কিছু নেই।

আরো পড়ুন: বেঞ্জামিন ফ্রাঙ্কলিনের সফল হওয়ার গোপন টিপস যা আপনি নিজের জীবনে অনুসরণ করতে পারেন।

 

৩। সময়জ্ঞান রাখুন:

কোথাও কারো সাথে দেখা করার কথা বললে কিংবা কোনো মিটিং বা আলোচনার ইস্যু থাকলে সঠিক সময়ে পৌঁছানোর চেষ্টা করুন। এবং নিজে যখন কথা বলবেন আপনি ঠিক কতটা সময় নিচ্ছেন সেই ব্যাপারটাও মাথায় রাখুন। অন্যদের সুযোগ দিন। সুযোগ বুঝে পুরো সময়টা নিজে নিয়ে নিবেন না।

৪। সুন্দরভাবে গুছিয়ে কথা বলুন :

সুন্দরভাবে গুছিয়ে কথা বলাকে আর্ট হিসেবে ধরা হয়। যে মানুষ যত সুন্দরভাবে কথা বলতে পারে সে ততবেশি সকলের প্রিয় হয়ে উঠে। কারো সাথে কথা বলার সময় আন্তরিক হয়ে কথা বলুন। যেখানে হেসে কথা বলতে হবে সেখানে হেসে কথা বলুন। গোমড়া মুখো বেশিরভাগ মানুষই পছন্দ করেন না।

৫। নিজের রাগ নিয়ন্ত্রণ করুন :

মাঝে মাঝে আমাদের জীবনে এমন সব ঘটনা ঘটে মাথা ঠান্ডা রাখা মুশকিল হয়ে পড়ে। কিন্তু তবুও নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। যে কোনো পরিস্থিতিতে আপনি যখন নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন তখন অন্যদের কাছে আপনার ব্যক্তিত্বের ইতিবাচক প্রভাব এমনিতেই পড়বে। সকলের চোখে আপনি সুন্দর ব্যক্তিত্বের মানুষ হয়ে উঠবেন।

৬। সম্মান দিয়ে কথা বলুন :

আপনি কার সাথে কথা বলছেন সেটার থেকেও গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে আপনি কিভাবে কথা বলছেন। যার সাথেই কথা বলুন না কেন সম্মান দিয়ে কথা বলুন। আপনি যখন অন্যদের সম্মান দিয়ে কথা বলবেন, অন্যরাও আপনাকে সম্মান দিবে। কিছু পাইতে হলে আগে সেটা দিতে হবে। আপনি অন্যদের সম্মান দিন, অন্যরাও আপনাকে সম্মান দিবে।

৭। বুঝেশুনে কথা বলুন :

সবাই সব কথা নিতে পারে না। সবাই সব ধরণের কথা বুঝবেও না। তাই যখন যার সাথে কথা বলবেন তাঁর সাইকোলজি আগে বুঝার চেষ্টা করুন। তারপর কথা বলুন। কোন কথা কতদূর টেনে নিবেন আর কোথায় বন্ধ করবেন এটা বুঝাও ব্যক্তিত্বের দারুণ একটি গুন।

আরো পড়ুন: কিভাবে Communication skill বা যোগাযোগ করার দক্ষতা বাড়াবেন?

 

৮। জ্ঞান বৃদ্ধি করুন :

আপনি যতবেশি পড়বেন ততবেশি জানবেন এবং সেই সাথে নিজের সচেতনতা, দক্ষতা বৃদ্ধি পাবে। জ্ঞানী লোকদের সকলে সমাদর করে। আপনি যখন অনেক ব্যাপারে জানবেন তখন এমনিতেই আপনার কদর অনেক বেড়ে যাবে। .

৯। ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করুন :

পরিস্থিতি যেমনই হোক সবসময় ইতিবাচক মনোভাব বজায় রাখুন। যারা ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করে তাঁদের সাথে বন্ধুত্ব করুন। নেতিবাচক মানুষজন যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলুন। গীবত, পরনিন্দা, অন্যের দোষত্রুটি নিয়ে সমালোচনা করা এগুলো থেকে বিরত থাকুন।

১০। নেতৃত্ব দেয়ার চেষ্টা করুন :

সবসময় ন্যায়ের পক্ষে থাকার চেষ্টা করবেন। অন্যায় দেখলে প্রতিবাদ করবেন। প্রতিবাদী মানুষজনকে সকলে পছন্দ করে এবং মনে রাখে। কোনো দূর্ঘটনা ঘটলে নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী সহযোগিতা করুন এবং অন্যদেরও উৎসাহিত করুন। যে কারো প্রয়োজনে সামর্থ্য অনুযায়ী সহযোগিতা করুন।

আপনার জন্য শুভকামনা।

আর্টিকেলটি লিখেছেন ফারজানা আক্তার।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *