কীভাবে বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলবেন?

বই-পড়ার-অভ্যাস

কীভাবে বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তোলা যায় আজ এই আর্টিকেলে আমরা সেই বিষয়ে আলোচনা করবো। বই পড়া কারো কারো শখ, কারো বা অভ্যাস অথবা অনেকের নেশা হতে পারে। তবে আপনি জোর করে কখনোই বই পড়ার অভ্যাস তৈরী করতে পারবেন না। জোর করে যদিও বা কয়েকটা বই পড়ে শেষ করে ফেলেন বেশিদূর আগাতে পারবেন না। জোর করে কোনো অভ্যাসকেই বেশিদূর এগিয়ে নেওয়া যায় না।

মনে করেন বই পড়ার আগ্রহ আপনার আছে, কিন্তু কোনো কারণে অভ্যাস হয়ে উঠছে না; অথবা বই পড়ার অভ্যাস ছিলো না কিন্তু এখন অভ্যাস তৈরী করতে চাচ্ছেন সেইক্ষেত্রে করণীয় কী?

আজ এই পোস্টে কিভাবে বই পড়ার অভ্যাস তৈরী করবেন সেই বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো।

 

১। পছন্দের জনরা খুঁজে বের করুন:

প্রথমে খুঁজে বের করুন আপনি কোন জনরার বই পড়তে পছন্দ করেন। বই বিভিন্ন জনরার হয়ে থাকে। যেমন : ইতিহাসবিষয়ক, আত্মউন্নয়নমূলক, বিজ্ঞানমূলক, উপন্যাস, ছোটগল্প, কবিতা ইত্যাদি। আপনার যে জনরার বই পড়তে ভালো লাগে সেই বইটি হাতে নিয়ে পড়তে শুরু করে দিন। বই পড়ার সময় যা পড়ছেন সেটি কল্পনাও করুন। একবার যখন বই পড়া এবং কল্পনাকে উপভোগ করতে শিখে যাবেন, অটোমেটিক্যালি বই পড়ার অভ্যাস হয়ে যাবে। ব্যক্তিগতভাবে আমি যদি নিজের কথা বলি কয়েকদিন বই না পড়লে আমার মাথা খালি খালি লাগে। মন কেমন অশান্ত হয়ে যায়। বই আমাকে ভিন্ন ধরণের মানসিক শক্তি এবং শান্তি দেয় যা কোনো মানুষের কাছ থেকে পাইনি আমি। আমার জীবনে আমার সেরা বন্ধু বই।

আরো পড়ুন: ভালোলাগা এবং ভালোবাসার মধ্যে পার্থক্য কী?

 

২। নিয়মিত পত্রিকা পড়ুন :

পত্রিকায় নানান ধরণের সংবাদ থাকে। এবং সংবাদের আকারও ছোট থাকে। সেগুলো পড়তে কারো তেমন সমস্যা হয় না এবং বিরক্তিও আসে না। আপনি শুরুটা পত্রিকা দিয়ে করতে দিয়ে পারেন। কয়েকদিন নিয়মিত পত্রিকা পড়ে তারপর পছন্দের জনরার বই হাতে নিতে পারেন।

৩। বই পড়ুয়া এবং সমমনা বন্ধু নির্বাচন করুন :

বন্ধু নির্বাচনের ক্ষেত্রে সমমনা এবং বই পড়ুয়াদের প্রায়োরিটি দিন। যখন আপনি কারো সাথে বই নিয়ে আলোচনা করবেন তখন নিশ্চয় আপনার সেই বিষয়ে জ্ঞান থাকতে হবে। আর, কোনো বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করতে হলে অবশ্যই সেই বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করতে হবে। বই পড়ুয়াদের সাথে বই নিয়ে আলোচনা হয় বেশি। বই পড়ুয়া বন্ধু থাকলে বই পড়ার অভ্যাস এবং আগ্রহ দু’টাই তৈরী হবে।

৪। ইন্টারনেট থেকে দূরে থাকুন :

বই হাতে নিয়ে যখন বসবেন তখন মোবাইলের ইন্টারনেট অফ করে নিন। কারণ মেসেঞ্জার কিংবা হোয়াটসএপের একটি শব্দ আপনার মনোযোগে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে। বই নিয়ে যখন বসবেন তখন পুরো সময় বইয়ের সাথে কাটান। যা পড়ছেন সেটা নিয়ে কল্পনায় ডুবে যান। সোশ্যাল মিডিয়াকে সাময়িক সময়ের জন্য বিদায় জানান।

আরো পড়ুন: ছোটগল্প : আমার অপূর্ণ প্রেম।

 

৫। টার্গেট ফিক্সড করে নিন :

বই পড়ার জন্য প্রতিদিনকার টার্গেট ফিক্সড করে নিন। যেমন মনে করুন প্রতিদিন আপনি যত ব্যস্তই থাকুন না কেন মিনিমাম ১০-১৫পেইজ বই পড়বেন। এইরকম নিজের সুবিধা অনুযায়ী একটা টার্গেট ফিক্সড করে নিন এবং সেটা মেইনটেইন করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করুন।

বই পড়া নিয়ে মোহাম্মদ জাফর ইকবালের একটি কথা আছে। তিনি বলেছিলেন আমরা যখন বই পড়ি তখন বইয়ের ঘটনাগুলো আমাদের ব্রেন কল্পনা করে, বিশ্লেষণ করার চেষ্টা করে। এতে আমাদের ব্রেন ডেভেলপড হয় অনেক।

বই পড়ার উপকারিতার শেষ নেই। তাই, যথাসম্ভব বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন।

আপনার জন্য শুভকামনা।

আর্টিকেলটি লিখেছেন ফারজানা আক্তার।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *