ভিডিওতে বেশি ভিউ কিংবা পোস্টে বেশি লাইক মানেই কি ভালো কনটেন্ট

content
ভিডিওতে বেশি ভিউ কিংবা পোস্টে বেশি লাইক মানেই কি ভালো কনটেন্ট? ক্যাম্পবেলের সূত্র কী বলে?
ভিডিওতে বেশি ভিউ কিংবা পোস্টে বেশি লাইক মানে অবশ্যই সবসময় ভালো কনটেন্ট নয়। কিন্তু সাইকোলোজিক্যালি এই ব্যাপারটি কীভাবে কাজ করে? ভারতীয় উপমহাদেশে যখন ব্রিটিশ শাসন ছিলো তখন একবার দিল্লীতে বেশ কোবরা মানে গোখরা সাপের প্রাদুর্ভাব বেড়ে গিয়েছিলো। তখন সরকার ঘোষণা ছিলো যে সাপ মেরে প্রমাণসহ জমা দিতে পারবে তাঁকে পুরস্কার দেওয়া হবে। প্রথমদিকে বেশ ভালো সাড়া পাওয়া গেলো।
প্রচুর মরা সাপ জমা পড়তে শুরু করলো। পরে সরকারি অফিসাররা দেখলো লোকজন সাপ মারছে কম, কিন্তু পালছে বেশি। কারণ যে যতবেশি সাপ পালবে, সেই সাপেরা ততবেশি বাচ্চা দিবে এবং আয়ও তত বাড়বে। এই অবস্থা দেখে সরকার পুরস্কার দেওয়া বন্ধ করে দিলো।পুরস্কার বন্ধ ঘোষণার পর লোকজন সাপ সব ছেড়ে দিলো। দেখা গেলো সাপের সংখ্যা আগের তুলনায় আরো অনেক বেড়ে গেলো।
একই ঘটনা ঘটেছিলো  ফিলিপাইনের হ্যানয়েতেও। সেখানে হুট করে ইঁদুরের প্রাদুর্ভাব বেশ বেড়ে গেলো। সরকার ঘোষণা দিলো যারা ইঁদুর মেরে লেজ জমা দিতে পারবে তাঁদের পুরস্কার দেওয়া হবে। শুরুতে বেশি বেশি ইঁদুরের লেজ জমা হতে থাকলো। পরে সরকারি লোকজন দেখলো লেজ ছাড়া ইঁদু রশহর জুড়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে কারণ লোকজন ইঁদুর না মেরে শুধু ইঁদুরের লেজ কেটে এনে জমা দিচ্ছে। ইঁদুর মারলে ইঁদুরের সংখ্যা কমে যাবে এবং সাথে তাঁদের ইনকামও কমে যাবে।

আরো শুনুন:

যে তিনটি কারণে মানুষ আপনার সমালোচনা করে

প্রার্থনা করার প্রধান উদ্দেশ্য কী?

সুখী হতে চাইলে…

মানুষের এই ধরণের সাইকোলজির ব্যাপারে ক্যাম্পবেলের একটি সূত্র আছে। সূত্রটি বাংলা করলে এর অর্থ হয় – অর্থাৎ, পুরস্কার সকল সময় ভালো দিকে যায় না, অবস্থাটিকে আরো খারাপ করে তুলতে পারে। যেমন দেখুন আজকাল অনলাইন পত্রিকাগুলোতে সেই ধরণের হেডলাইন এবং নিউজ হয় যেগুলোতে ক্লিক বেশি পড়ে। ক্লিক যত বেশি হবে তাঁদের ইনকামও তত বেশি হবে।  আজকাল সেই ধরণের নাটক বেশি হচ্ছে এবং ভিডিও বানানো হচ্ছে যেগুলো মানসম্মত নয়, কিন্তু ভিউ বেশি হচ্ছে। আজকাল কাজের বা সংবাদের কোয়ালিটির দিকে কারো নজর নেই, সবার লক্ষ্য ভিউয়ের দিকে।  অতিরিক্ত ভিউয়ের লোভ আমাদের কোনো দিকে নিয়ে যাচ্ছে সেই বিষয়টি নিয়ে ভাবার সময় চলে এসেছে।ক্যাম্পবেলের এই সূত্রটি আমাদেরস কলের মনে রাখা উচিত।
সবার জন্য শুভ কামনা।
লেখা: ফারজানা আক্তার

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *